আস্থা হারাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
প্রতিটি দেশের একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকে। তেমনি এদেশের কেন্দ্রী ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অন্যকথায় যেকোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যসব ব্যাংকের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকই ঠিক করে দেয় দেশের ব্যাংকগুলো কীভাবে চলবে। জনগণের চাহিদা অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ সরবরাহ করে থাকে। তেমনি দেশের অর্থ ভাণ্ডার গচ্ছিত থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। লেনদেনের জন্য জনগণের সর্বোচ্চ আস্থা ভরসার প্রতীক হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যে কারণে দেশের মুদ্রার গায়ে সই থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের।
আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির দুর্ভাগ্য যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। যা হওয়ার কথা ছিল না। যেখানে ছোট খাট ব্যাংকের দুর্নীতি মেনে নেয়া যায় না। সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা কিংবা কর্তব্য কাজে অবহেলা কীভাবে মেনে নেয়া সম্ভব? কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংকের মা বাপ।
রিজার্ভ চুরির কলঙ্ক মুছতে না মুছতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে স্বর্ণ হেরফেরের বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেল। রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর পদত্যাগ করেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন পরিচালক। অথচ ভল্টের স্বর্ণ কেলেঙ্কারির পর এখনো কেউ পদত্যাগ করেনি।
এদিকে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব ঘটনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন। যেমন বেসিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে তিনি বলেছিলেন ৪ হাজার কোটি টাকা কিছুই না। তেমনি স্বর্ণ হেরফেরের বিষয়টিকে তিনি তেমন ভাবেই অ্যাবসিউলিইটলি ইউজলেস বলে উড়িয়ে দিলেন। কপাল ভালো তার মুখ থেকে রাবিশ শব্দটা বের হয়নি। ভেবেছিলাম এসব অভিযোগ তিনি রাবিশ বলে উড়িয়ে দেবেন।
দেশের শুল্ক গোয়েন্দা স্বর্ণ জমা দেওয়া সম্পর্কে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করেনি।তারা তাদের দাবির প্রতি অনড় রয়েছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট রক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা স্বর্ণ হেরফের হয়নি বলে জোর দাবি জানাচ্ছে। তবে এটাতো ঠিক সরকারের দুটো সংস্থা সত্য হতে পারে না। একজন সত্য আরেকজন মিথ্যা বলছে। সরকারকেই এখন এ বিষয়টি সমাধান করতে হবে কারা ঠিক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিজনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে সরকারকে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের সাজা দিতে হবে। এমন প্রত্যাশাই করে জনগণ। আর সেটা না হলে লোকজন ভাববে সরকার চোর-ডাকাতদের রক্ষক হয়ে কাজ করছে। আশা করি এমনটা হবে না।
No comments