Sunday, September 2, 2018

হিন্দুদের নিয়ে আ.লীগ-বিএনপির রাজনীতি মঙ্গলকর নয়



বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হতে পারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল  কাদেরের এমন কথা শোনার পর হিন্দুদের টেনশন যে বেড়ে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাদের মিয়ার এ কথার জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন হিন্দুদের ওপর যে হামলা হবে তা তিনি আগেই জানলেন কীভাবে? বিএনপির মতে আওয়ামী লীগই হিন্দুদের ওপর হামলা করে দোষ চাপায় বিএনপির ঘাড়ে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এমন বক্তব্য বহুবার দিয়েছেন। 

বাস্তবতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা কিংবা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কখনই চান না হিন্দুদের ওপর হামলা হোক। বরং বাস্তবতা হচ্ছে হিন্দুদের ওপর হামলা করে এই দুই দলের সুযোগ সন্ধানীরা। এরা হিন্দুদের সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য বিভিন্ন উসিলায় হামলা করে থাকে। এসব হামলায় বিন্দু মাত্র সমর্থন নেই আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির।

 বাংলাদেশের যেসব উগ্রবাদী ইসলামিক দল আছে তারাই মাঝে মাঝে মাইকিং করে হিন্দুদের ওপর বিষোদগার করে থাকে। হিন্দুদের ওপর হামলার উসকানি দেয়। এই উগ্র ইসলামিক দলগুলোকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কিছু ভুঁইফোড় নেতা। হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর ওপর হামলায় অগ্র সৈনিক হিসেবে থাকে এই জঙ্গিরা আর নেপথ্যে থাকে সুযোগ সন্ধানী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা।

উদাহরণ হিসেবে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতাদের  জড়িত থাকার খবর পাওয়া যায়। একই ঘটনা চোখে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে। সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা হেফাজত ইসলামকে সামনে রেখে হিন্দুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করে।

বাংলাদেশের হিন্দুরা এখন আর একতরফাভাবে কোনো একটি নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না। হিন্দুরা এখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেয়। তেমনি আরেক দল হিন্দু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেয়। তাদের আত্মার সদগতি  কামনা করে।

যদিও সুরঞ্জিত সেন গুপ্তর মতো নেতা মারা গেলে  মসজিদে প্রার্থনা হয়েছে। এমনটা  করতে  দেখেনি কোনো হিন্দু। তারপরও হিন্দুরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের শ্রদ্ধা করে সম্মান করে। সেটা দেশের রাজনীতির জন্য ভালো ও মঙ্গলকর। 

তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে হিন্দু জনগোষ্ঠীর আশা তারা যেন ক্ষমতা দখলের লোভে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা না করে। সর্বোপরি হিন্দুদের নিয়ে যেন নোংরা রাজনীতি না হয়। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বলব আপনারা যদি দেখেন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা হিন্দুদের ওপর হামলার উসকানি দিয়েছে। তা সঙ্গে সঙ্গে ওই দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠি দিয়ে জানান। দয়া করে এটা নিয়ে আপনারা কোনো দলীয় রাজনীতি করবেন না। কারণ হিন্দু নির্যাতনকারীদের আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে স্থান নেই।

গ্রামের হিন্দুদের বলব আপনার এক ভাই যদি আওয়ামী লীগ করে তবে আরেক ভাই যেন বিএনপিতে নাম লেখায়। কারণ শয়তান আওয়ামী লীগেও আছে বিএনপিতেও আছে। তাই কোন শয়তান আপনার মন্দিরে কিংবা সম্পত্তিতে হামলা করে কোন দলে লুকিয়ে আছে তা জানতে আপনাদের এটা করতে হবে। তা না হলে কাদের মিয়া ও ফখরুল মিয়ার রাজনীতির শিকার হবেন আপনারা ও আপনাদের হিন্দু সম্প্রদায়।      

লেখক: সাংবাদিক
তারিখ: ৩-৯-২০১৮
সকাল ১০ টা ১২

No comments:

Post a Comment