Header Ads

Header ADS

কার দখলে চিটফাণ্ডের লাল বই ও পেন ড্রাইভ, মোদি চালে কুপোকাত মমতা

এই রাজীব কুমারকে বাচাতে মরিয়া মমতা


সুমন দত্ত

সারদা ও রোজভ্যালি এই দুই অর্থ কেলেঙ্কারি কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আর এতে হাওয়া দিচ্ছে মোদি বিরোধী বাইরের রাজনৈতিক শক্তিগুলো। মাঝখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম ফাকায় গোল দিতে চাইছে। 

কথায় আছে না রাজায় রাজায় যুদ্ধ করে নেপোয় মারে দই। পশ্চিমবঙ্গের বামেরা সেই নেপোয়ের ভূমিকায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মোদি বিরোধী শিবির যখন শক্তি সঞ্চয় করছে ঠিক তখনই সিবিআইকে লেলিয়ে দিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকার বিরোধী জোটকে ভাঙতে চাইছে। এটা তারই লক্ষণ।

 গরিবের টাকা মেরে দেয়ার ইস্যুকে পুজি করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নিজেদের বিজয় পতাকা উড়াতে চাইছে। এমনটা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কারণ এতদিন মমতাজির সঙ্গে মোদি বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলেছেন। রোজভ্যালি ও সারদা কেলেঙ্কারি বিজেপি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল। ক্ষমতায় থাকতে এই ইস্যু নিয়ে বিজেপি ছিল নীরব। এখন ক্ষমতার শেষ সময়ে সিবিআইকে দিয়ে বিজেপি মমতার ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন। 

বিজেপির উদ্দেশ্য সৎ হলে ক্ষমতায় থাকতেই এই তদন্ত শেষ করে দোষীদের সাজা দিতে পারতো। হাজার হাজার গরিবের আত্মসাৎ হওয়া টাকা ফেরত পাওয়া যেত। সেই ব্যবস্থা মোদি কিংবা মমতা করেনি। 

মমতা ব্যনার্জি সারদা ও রোজভ্যালি কাণ্ডে পুজি হারানোর লোকদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে পারেনি। বরং উল্টো তিনি আত্মসাৎকারীদের রক্ষা করেছেন। আর লোক দেখাতে ওই কেলেঙ্কারিতে পুঁজি হারানো কিছু মানুষকে ক্ষতিপুরন দিয়েছেন। ভুক্তভোগী সিংহভাগ লোক অর্থ ফিরে পায়নি। আর এদেরকে পুঁজি করেই বিজেপি নির্বাচনের আগে এই সিবিআই খেলা খেলছে।   

সারদা ও রোজভ্যালি কাণ্ডের বিচার করতে না পারাটা বিজেপি ও তৃণমূল উভয় দায়ী। উভয় গরিবের টাকা মেরে দেয়ার বেনিফিশিয়ারি। মমতা ব্যনার্জী এখন প্রকাশ্যে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নিয়েছে। মুখে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে এনে এই ঘটনার তদন্তে বাধা দিচ্ছেন। যা আদৌ কাম্য নয়। একজন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার যদি সৎ হয়ে থাকেন তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে অসুবিধা কোথায়? 

তিনি সারদা কান্ডের নথি সরিয়েছেন কিনা তা সিবিআইকে জানাতে চাননা কেন? তার কাছে যেসব তথ্য প্রমাণ আছে তাতে সিবিআইকে শেয়ার করতে সমস্যা কি? এসব তথ্য সরকারি। তা সরকারি আরেকটি সংস্থাকে দিতে বাধা কিসের। পশ্চিমবঙ্গের আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার যেমন ভারতের সেবক। তেমনি সিবিআই কর্মকর্তারাও ভারতের সেবক। প্রকৃতপক্ষে দেখা যাচ্ছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজীব কুমার মমতা ব্যনার্জীর সেবক হয়ে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। 

একজন সরকারি কর্মচারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি করতে পারেন কিনা। সেটা বিচার্য বিষয়। এটাই সংবিধান লঙ্ঘন। দুর্নীতির তদন্ত করার স্বার্থে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাবে না। এটাই অসাংবিধানিক কথা। এটাই আইনে বাধা সৃষ্টি। গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে তার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

 সারদা ও রোজভ্যালি উভয় কেলেঙ্কারির তদন্ত সুপ্রিমকোর্টের আদেশে সিবিআই করছে।  একই সংস্থা এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মদন মিত্র, অভিনেতা তাপস পাল, মাতং সিংসহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তখন এ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে আনা হয়নি। তবে আজ কেন সিবিআইয়ের কাজ অসাংবিধানিক হবে? রাজীব কুমার কি মন্ত্রী মদন মিত্রের চাইতে বড় সরকারি পদধারী? 

ভোটের আগে মমতা ব্যানার্জী সেই তাদের আশ্রয় নিচ্ছেন যাদের ওপর ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হবেন। পুলিশকে ভালো সনদ দেবার তিনি কে? কোন পুলিশ ভালো কোন খারাপ, তিনি জানেন কিভাবে? ভালো পুলিশ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। এটা কোনো আইনে আছে? আজ মমতা যাদের জন্য আন্দোলন করছেন তারা কেউ গরিব না। মমতার উচিত তাদের জন্য আন্দোলন করা যারা সারদা ও রোজভ্যালি কাণ্ডে পুজি হারিয়েছেন। বরং মমতার উচিত এই অর্থ কেলেঙ্কারি বিচার না করার জন্য মোদি বিরোধী আন্দোলন করা। কিন্তু তিনি তা না করে সংবিধানের দোহাই দিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নিচ্ছেন। 

সারদা কেলেঙ্কারির গুরুত্বপূর্ণ লাল বই ও পেন ড্রাইভ কার দখলে? সেটা তিনি বলছেন না কেন? সারদা কেলেঙ্কারির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত সেন বলেছেন ওই লাল বই ও পেন ড্রাইভে এই কেলেঙ্কারির জড়িতদের নাম আছে। আর সিবিআই সেই সূত্র ধরেই রাজীব কুমারের কাছে গিয়েছিল। কারণ এই লাল বই ও পেনড্রাইভ তদন্ত করে রাজীব কুমার নিজের দখলে রেখেছেন। 

সিবিআইয়ের আগে সারদা ও রোজভ্যালি কান্ডের তদন্ত করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। যার নেতৃত্ব দিয়েছিল রাজীব কুমার। তাই তার কাছ থেকে এই তদন্তের তথ্য প্রমাণ চাওয়া অযৌক্তিক নয়।এই কাজে বাধা দেয়া মানে দুর্নীতিবাজদের আড়াল করতে সহায়তা করা। যারা তৃণমূলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।   

No comments

Theme images by wingmar. Powered by Blogger.