৬৪ বছর পর খোঁজ পেল মায়ের
![]() |
বুথবেবি স্টিভকে যখন পাওয়া যায় |
এ যেন রুপ কথার গল্পের মত। ৬৪ বছর পর ছেলে খুঁজে পেল তার আসল মাকে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি এতে সহায়তা করে। ঘটনাটা যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও অঙ্গরাজ্যের।
১৯৫৪ সালে জানুয়ারি মাসের এক শীতের দিন রবার্ট উইলসন সিনিয়র ও রবার্ট উইলসন জুনিয়ার এক টেলিফোন বুথের সামনে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। তারা দুজন ছিল ল্যাংকেস্টার এলাকার রুটি সরবরাহকারী। তারা খেয়াল করে টেলিফোন বুথের ভেতর কি যেন নড়াচড়া করছে। তারা সেখানে যায়। গিয়ে দেখে ২ মাস বয়সী এক ছেলে শিশু বাক্সের মধ্যে আছে। শিশুটির শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা। সঙ্গে একটি দুধের বোতল। তারা পুলিশে খবর দেয়। বুথে শিশুটি খুঁজে পায় বলে এর নাম হয় বুথবেবি।
![]() |
বুথবেবি নিয়ে সেদিনকার পত্রিকার শিরোনাম |
এই বুথবেবির মা কে সেদিন পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজে। কেউ বলতে পারে না কোথা থেকে এলো এই শিশু। পত্রিকার শিরোনাম হয় এই বুথবেবি নিয়ে। ৬৪ বছর পর আজকের দিনে জানা গেল সেই বুথ বেবির মা বাবা কে।
![]() |
বুথবেবি স্টিভ |
মেয়েরা বাবাকে জিজ্ঞাসা করে তুমি কোথা থেকে এসেছ বাবা। তোমার বংশধর কারা? এসব প্রশ্নের উত্তর স্টিভ কখনও দিতে পারে না। মেয়েরা যখন টিনএজার হলো তখন স্টিভের মাথায় জেদ চাপলো তার বাবা-মাকে খুঁজে বের করার। এজন্য সে ancestry.com নামের একটি ওয়েব সাইটের সাহায্য নিল। এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সে তার ডিএনএ টেস্ট করে। তারপর ডিএনএ টেস্টের ৩ মাস পর সে তার চাচাত ভাইয়ের খোঁজ পায়। সেই চাচাত ভাইয়ের মাধ্যমে সে তার আরেক ভাইয়ের খোজ পায়। ওই ভাই তার মায়ের খোঁজ এনে দেয়।
![]() |
বুথবেবির পালক বাবা |
স্টিভের চাচাত ভাই জানায় তাকে বুথে ফেলে আসে তার মা। এটি তার পরিবারের একটি গোপন সত্য। ১৮ বছর বয়সে তার মা তাকে জন্ম দেয়। তখন তার মায়ের বিয়ে হয়নি। তার বাবা তার মাকে বিয়ে করার জন্য শর্ত জুড়ে দেয়। স্টিভের বাবা তার মাকে জানায় সন্তান নিয়ে সে তাকে বিয়ে করতে পারবে না। এ কথা শুনে স্টিভের মা তাকে টেলিফোন বুথে ফেলে আসে। পরে সেই বিয়ে আর হয়নি। তার বাবা নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে তার মা আরেকজনকে বিয়ে করে। সেই ঘরে তার দুই মেয়ে আছে।
স্টিভের মা থাকে বাল্টিমোরে। সেখানে ছেলের সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বরে তার দেখা হবে। স্টিভ বলে এটা দারুন এক খবর যে আমি আমার আসল বাবা মাকে খুঁজে পেয়েছি। তবে আমি দত্তক নেয়া বাবা মাকেই আমার নিজের মা-বাবা মনে করি। তাদেরকে ভুলে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব।
No comments