Header Ads

Header ADS

গৃহপালিতদের কথা শুনবে কেন সরকার?


সরকারের গৃহপালিত রাজনীতিবিদ বলতে আমরা লেজোহোমো এরশাদকেই বুঝি। দেশে আরও যে গৃহপালিত পেশার লোক আছে। সেটা আমরা কাউকে বুঝতেই দেই না। আর সেই তারা হলো দেশের সাংবাদিক সমাজের নেতারা। রাতদিন এরা শেখ হাসিনা সরকারের দালালি করে যায়। 

এরা এতটাই বেহায়া যে লাজ শরমের মাথা খেয়ে এরা সরকারের দালালি করে। দালালি মার্কা ফরমায়েশি নিউজ লেখে। যেসব হাউজে এরা কাজ করে তার মালিক সরকার দলের পৃষ্ঠপোষক। এ কারণে সরকার বিরোধী কোনো বক্তব্য আসে না এসব মিডিয়ার কাছ থেকে। এদের নোংরা দালালিটা সবচেয়ে বেশি উন্মোচিত হয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে। একটা নিকৃষ্ট প্রতিযোগিতা চলে ওই সংবাদ সম্মেলন ঘিরে।  

 সাংবাদিকতার এথিকস বিসর্জন দিয়ে এরা এই পেশার বারোটা বাজিয়েছে। সুযোগ পেলে অন্য সাংবাদিকের পাছায় বাঁশ দিতে পর্যন্ত হাত কাপে না এদের। সরকার এদের চাকরের মত মনে করে। আর এ কারণে এসব চাকর সাংবাদিকের কথা এক বিন্দু পরিমাণ আমলে না নিয়ে সরকার পাশ করেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। 

এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমলের অফিস সিক্রেটস আইন ফিরিয়ে আনা হয়েছে। স্বাধীন সাংবাদিকতা ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে নতুন আইনের মাধ্যমে। আর এ নিয়ে একযোগে দালাল সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতারা লোক দেখানো প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। কে কতটা অসন্তুষ্ট তার প্রতিযোগিতা মিডিয়ায় দেখানো হচ্ছে।

 বাস্তবে এই দালাল সাংবাদিকরা কিন্তু খুশি হয়েছে। আরামে এসি রুমে বসে সাংবাদিকতা করা যাবে। টেনশন ফ্রি হয়ে চাকরি করা যাবে। চাকরি খোয়ানোর আর কোনো টেনশন রইল না। মাস শেষে মোটা অংকের মাইনে জমা হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এটাই তো তারা চেয়েছিল।  

আজ যদি সাংবাদিকরা গৃহপালিত না হতো। সরকারের ক্ষমতা ছিল না এ ধরনের একটা আইন করতে।  প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আজ বিবি গোলামের বাক্সে পরিণত হয়েছে। আগে বিটিভিকে বলা হতো বিবি গোলামের বাক্স। এখন বেসরকারি সবগুলো টিভি চ্যানেল বিবি গোলামের বাক্সে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা কোথায় গেল? কি বলল? সবগুলো চ্যানেল একযোগে দেখাতে থাকে। অনেকে সরাসরি দেখায়। অন্যদিকে বিরোধীদের কোনো মিটিং সরাসরি তো দূরের কথা। কত তাড়াতাড়ি দেখিয়ে খবর শেষ করতে পারবে সেভাবে এডিট করে প্রচার করা হয়।  

আজ মন্ত্রী এমপিদের দুর্নীতি নিয়ে কোনো প্রতিবেদন নেই। যারা গুম হচ্ছে, ডিবি পরিচয়ে কাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারা নিচ্ছে এসব নিয়ে কোনো চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন নেই। সেবা খাতগুলোতে লোকজনের নিত্য হয়রানি ও অব্যবস্থাপনার খবর খুব একটা দেখা যায় না। দেখা গেলেও সরকারের সেদিকে কোনো নজর নেই। তাই আজ গণমাধ্যমের প্রতি বিশ্বাস উঠে গেছে লোকজনের। সেই জায়গায় দখলে নিয়েছে ফেসবুকের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।    

সব জায়গায় সরকারের লোক যে তথ্য দেয় সেটাকেই ছাপে ও প্রচার করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া। সাংবাদিকরা নিজে থেকে খবর বের করে আনতে পারে না। আর কিছু মিডিয়া আছে এরা পত্রিকার মালিকের স্বার্থ যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে নিউজ পরিবেশন করে। 

তারপরও নিজের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গৃহপালিত এসব নমুনা সাংবাদিক থাকতে সরকারকে কেন এমন একটা কঠোর আইন করতে হলো? সেটাই ভাবাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে এমন অনেক বিধান আছে যা দিয়ে সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতা বন্ধ করা যায়। তার জন্য নতুন আইনের প্রয়োজন হয় না। আর সবচেয়ে অবাক লাগে আইন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা রক্ষা করতে হয়। এটা বড়ই লজ্জার। পৃথিবীতে বাংলাদেশই মনে হয় একটা জাতি যারা চেতনা রক্ষা করতে আইন করে। এ বড়ই হাস্যকর।     


No comments

Theme images by wingmar. Powered by Blogger.