Friday, September 7, 2018

মান্নার দাবিতে বিএনপির করুন দশা ফুটে উঠল



হাতি যখন গর্তে পড়ে, কোলাব্যাঙও তখন লাথি মারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থা এখন এই প্রবাদ বাক্যের মতো। নাগরিক ঐক্যর নেতা মাহামুদুর রহমান মান্না বিএনপিকে এক প্রস্তাব দিয়েছেন। এ সরকারের পতন হলে, যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপি ঐক্য ক্ষমতায় গেলে মান্না-বিচৌধুরি-রবদের প্রথম ২ বছর ৬ মাস ক্ষমতায় থাকতে দিতে হবে। বাকী সময় থাকবে বিএনপি। 

নাই পার্টির নেতাদের এমন দাবি শুনে কার না হাসি পায়। যুক্তফ্রন্টের এই দাবি নাগরিক ঐক্যের নেতা মান্নার মুখ দিয়ে এসেছে দাবি গণমাধ্যমের। নির্বাচন হতে কয়েক মাস বাকী। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট এখনো তৈরি হয়নি। তার আগেই এসব দাবি পেশ অনেকটা 'গাই না কিনতেই দোয়ানির আলাপের' মতো শোনা যাচ্ছে। 

বিএনপি আজ সবদিক দিয়ে আত্মসমর্পণ করছে। এরই প্রমাণ মিলছে এসব নাই পার্টির নেতাদের কথা বার্তায়। নাগরিক ঐক্যের নেতা জোনায়েদ সাকি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন করে জামানত খুইয়েছেন। 

বি চৌধুরী যতদিন বিএনপি করতেন ততদিন তার দাম ছিল। বিএনপি ছাড়লেন তো নিজের রাজনীতির শেষ করলেন। নিজের এলাকায় ৫ হাজার ভোটও পান না বি চৌধুরী। পুরাণ ঢাকায় (বর্তমান ঢাকা-৬)তে নির্বাচন করে পেয়ে ছিলেন মাত্র ২ হাজার ভোট। 

অন্যদিকে কর্নেল অলির মত নেতা বিএনপি ছেড়ে এসে নিজের সংসদীয় আসন ধরে রেখে প্রমাণ করেছেন তিনি বিএনপির ইমেজে নেতা নন। বরং তার ইমেজে বিএনপি চলে।

খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রেখে সরকার নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এটা তাদের পুরানো কৌশল। বিচার বিভাগ দখল করে রেখেছে সরকার। তাই মওদুদের মতো নেতা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন আইনি মোকাবেলা করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। আজ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা থাকলে বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করার চিন্তা করতেন। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে কোন বিচারক নিজ ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে চাইবে? যেখানে বিচার বিভাগের দারোগা হিসেবে আছে আনিসুর কোম্পানি।

আর খালেদার মামলা এখন নিম্ন আদালতে। আর সবাই জানে নিম্ন আদালতের চেয়ার টেবিল থেকে শুরু করে আইনজীবী-বিচারক সবই জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে আদালতের কর্মকাণ্ড চালায়। তার ওপর প্রধান বিচারপতির এমন অপসারণ তাদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। আজ যারা সরকার বিরোধী আন্দোলন করছেন তাদের উচিত সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি স্বাধীন বিচার বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানানো। 

সরকার ইচ্ছা করলেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। তার প্রথম ধাপ হিসেবে খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দেয়া। তারপর বিএনপিকে রাজনৈতিক সমাবেশ করতে দেয়া। মিডিয়াতে বিরোধীদের প্রচার চালানোর সুযোগ করে দেয়া। এই তিনটি কাজ করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। তবে সেটা হবার নয়।  সরকার খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেই আরেকটা ৫ জানুয়ারি মার্কা ভোটার বিহীন নির্বাচন করতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই লক্ষণই বিরাজমান। 
         

No comments:

Post a Comment