নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি জাতিসংঘ, রোহিঙ্গারা বাঁচালো সরকারকে!
সুমন দত্ত
বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বক্তব্যের পর, এখন কি বলবেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও লীগের দালাল সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও কলম সৈনিকরা। জাতিসংঘ টিআইবির মতো মন্তব্য করলো।
আ. লীগের নেতারা তো এতদিন টিআইবি বিরুদ্ধে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে সদ্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আশা করি তিনি জাতিসংঘ সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন।
আওয়ামী লীগের জন্য স্বস্তির খবর জাল জালিয়াতির এই নির্বাচন জাতিসংঘ মেনে না নিলেও সরকারকে এ নিয়ে কোনো চাপ প্রয়োগ করবে না। কারণ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলা করছে। বলতে গেলে রোহিঙ্গাদের কারণে জাতিসংঘ শেখ হাসিনা সরকারকে ছাড় দিল।আগামী ৫ বছর শেখ হাসিনা দেশ শাসনের সুযোগ পেল।
রোহিঙ্গা সমস্যা আ.লীগের জন্য শাপে বর হিসেবে দেখা দিল। তেমন ইঙ্গিতই জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছ থেকে জানা গেল। এখন দেখার বিষয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতির কৌশল কি হয়। লন্ডনে তারেক জিয়ার কৌশল কি? দাউদ আইএসআই নাকি তাকে বুদ্ধি দেয়। তাদের মাথা থেকে এখন কি বুদ্ধি বের হয় সেটার দেখার অপেক্ষায় জাতি।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বিএনপি নেতা কর্মীরা খুব একটা কথা বলছেন না। কারণ তারা জানে তাদের পেছনে কেউ নেই। যে রাজনীতি তারেক জিয়া শুরু করেছিলেন, তা মাঠে মারা গেছে। ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা আর যাই হোক তারেক জিয়ার নেতৃত্বে কোনো কাজ করবে না। এটা মুখে না বললেও তাদের হাব ভাবে বোঝা যায়।
জামায়েতকে নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট আগামীতে রাজনীতিও করবে না। বিএনপিকে হয় জামায়েতকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে নতুবা ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। দুজনকে এক সঙ্গে নিয়ে আগামীতে বিএনপির কোনো রাজনীতি হবে না। আর হলে বিএনপি আগামীতে এমন ফলই পাবে। তাই বিএনপিকে ভাবতে হবে তারা কি করবে? এ বিষয়টা জামায়েত পার্টি হিসেবে বুঝে গেছে। কিন্তু বিএনপি বোঝেনি।
ড.কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, কাদের সিদ্দিকী কিংবা মাহামুদুর রহমান মান্না তারা জামায়েত মার্কা রাজনীতি করে না। বরং তারা জামায়াতের বিপরীত আদর্শের রাজনীতি করে। তাই ঐক্যফ্রন্টে জামায়েত নাই ২০ দলে জামায়েত আছে এই ব্যাখ্যা পাবলিক খাবে না। কারণ এটাই যদি হতো তবে ধানের শীষ ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক হতো, জামায়েতের প্রতীক হতো অন্য। যেটা প্রতীক বরাদ্দের আগ দিন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত ছিল।
জামায়েতকে ধানের শীষ দেয়াতেই বিএনপি সব জায়গা থেকে নাই হয়ে গেছে। মানে তাকে নাই করে দেয়া হয়েছে। এক জামায়েত ইস্যুতেই জাল জালিয়াতির এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভারতের সমর্থন পেয়েছে। এবং শেখ হাসিনার প্রশাসন এটা করার সাহস দেখিয়েছে।
জামায়েতকে নিয়ে এই নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট সফল হতো যদি নির্বাচনটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতো। শেখ হাসিনার অধীনে হওয়ার কারণেই এই নির্বাচন হয়েছে জাল ভোট কেন্দ্রিক।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে যে রেকর্ড করেছেন সেটি পৃথিবীর কোনো শাসক করতে পারবে কিনা সন্দেহ। তিনি রাষ্ট্র প্রধান হয়ে গণতন্ত্রের লেবাস পড়ে দুটি নির্বাচন করেছেন। একটি ভোটারবিহীনভাবে নির্বাচন। আরেকটি জাল ভোটের মাধ্যমে। এমন সৌভাগ্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের নাই।
গণতান্ত্রিক কাঠামোতে সরকারে আসতে ভোট বা ভোটার লাগে না। এটা তিনি বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন। অনেকেই বলেন বাংলাদেশ নাকি সব সম্ভবের দেশ। নতুন করে এই তত্ত্ব আবার প্রমাণিত হলো।
No comments