Header Ads

Header ADS

দু:খ টিআইবি বিবিসিকে কিনতে পারলো না সরকার


সুমন দত্ত
বাংলাদেশে এমন কিছু সংস্থা আছে। যাদেরকে পয়সা দিয়ে কেনা যায় না। ডরভয় দেখিয়েও কাজ করানো যায় না। তেমনই একটি সংস্থা টিআইবি। যার পূর্ণ অর্থ হলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ। সংস্থাটি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে মত দিয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার। টিআইবির প্রতিবেদন হজম করতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। একে জামাত-বিএনপির প্রতিধ্বনি বলে প্রচার করা হচ্ছে। 

সত্য কখনো গোপন থাকে না। দেশে একটি নির্বাচন হয়ে গেল। কীভাবে নির্বাচন হলো সারা দেশের মানুষ দেখেছে ও জেনেছে। সেটাই টিআইবি ও বিবিসির মত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করেছে। আর এতেই আতে ঘা লেগেছে শাসকদের। 

নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ দাস হিসেবে কাজ করেছে। সেটা টিআইবির প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। কোথায় কীভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে তার ক্যাটাগরিকাল বর্ণনা দিয়েছে টিআইবি। টিআইবি যদি মিথ্যা বলে তাহলে মামলাবাজ সরকার কেন টিআইবির প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে মামলা করছে না? সবচেয়ে অবাক করার ঘটনা দেশের মূল ধারার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া নির্বাচনের রিগিং নিয়ে কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। অথচ রিগিংয়ের নানা কাহিনী বিএনপি ও টিআইবির কাছে রয়েছে। এতে বোঝাই যাচ্ছে সরকার গণমাধ্যমের ওপর কতটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে। 

দেশের ক্ষমতা জবর দখলকারী সরকার টিআইবির প্রতিবেদনের সমালোচনা করছে অথচ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমন কি আদালতের বিচারকদের তথা বিচার বিভাগকে নিজেদের দখলে রেখেও টিআইবির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে না। এর প্রধান কারণ তারা জানে চোরের মায়ের বড় গলা মানায় না। ডাকাতি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল হয়েছে, তা নিয়ে উচ্চ বাচ্য না করাই ভালো। 

জনমতের বিরুদ্ধে এই সরকার গঠিত হয়েছে। এটি একটি ভুয়ো নির্বাচনের ভুয়ো সরকার। দেশের মানুষ সরকার পরিবর্তনের একমাত্র গণতান্ত্রিক অধিকারটি প্রয়োগ করতে পারেনি। জনগণের সেবক নয় তাদের মালিক হয়ে দেশ শাসন করে যাচ্ছে এই সরকার।

 মানুষের মৌলিক অধিকার হরণকারী এই সরকার ভোটে জেতেনি। যারা ডিজিটাল আইনের নামে বাক স্বাধীনতা হরণ করে তারা আর যাই হোক গণতান্ত্রিক সরকার নয়। এরা চীনা বাকশালি অথবা হিটলার, মুসলোলিহিনিরর, আইয়ুব, টিক্কা খানের মতাদর্শের সরকার। গুম ডর ভয় দেখানোর স্টাইল হচ্ছে স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের লক্ষণ বা চরিত্র। যা আজ আওয়ামী লীগের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। ভয় দেখিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগ করানো। ডর ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ঘর ছাড়া করানো। সুশীল সমাজের লোকদের ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের অপহরণ করে ভয় দেখানো। এসবই আওয়ামী লীগের শাসনে হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে থাকা ফ্যাসিস্ট শক্তির দ্বারাই এসব হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট শক্তি ওয়ান এলিবেনের সময় সরকারের ঘাড়ে চেপেছিল। তারাই আজ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোটায় পৌঁছে দিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকারের জন্য যে আওয়ামী লীগ এক কালে লড়াই সংগ্রাম করেছে আজ তারাই ভোটাধিকার হরণকারী। এ যেন দেবতা রামের রাবণ রূপ। আজকের আওয়ামী লীগ নেতাদের এই উপলব্ধিটা নেই।        

No comments

Theme images by wingmar. Powered by Blogger.