Header Ads

Header ADS

পাক হিন্দুরা পায় নাগরিকত্ব বাংলার হিন্দু পায় জেল


ভারতের এক শ্রেণির অভিবাসী হিন্দুরা অনুপ্রবেশের দায়ে জেল খাটছে তো আরেক শ্রেণির অভিবাসী হিন্দুরা পাচ্ছে নাগরিকত্ব। হিন্দুদের মধ্যে বিভেদের রাজনীতি থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে জানালেন ভারত ও বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া উপমহাদেশে হিন্দুরা এখনো মুসলিমদের দ্বারা নির্যাতিত। সেটা যে শুধু বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে হচ্ছে তেমনটা নয়। ভারতেও হচ্ছে। সেই খবর পত্রিকাতে আসছে না। কারণ এসব খবর পত্রিকায় ছাপলে অনেকের রাজনীতির মুখোশ খুলে যাবে।যেমন খুলে যাবে হিন্দুত্ববাদের নামে বিজেপির মুখোশ তেমনি খুলে যাবে সেকুল্যারিজমের নামে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের মুখোশ। আজ খবর পাকিস্তানের ৯০ হিন্দুকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান। সেটা পাকিস্তান লাগোয়া গুজরাটে। এসব খবর কেন পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরায় হয় না। এই প্রশ্নের উত্তর জানাটা জরুরী। 

 এটা স্বাভাবিক পাকিস্তানের হিন্দুরা প্রতিবেশী গুজরাট, রাজস্থান এসব প্রদেশে আশ্রয় নেবে । তাদের ভাষা শিক্ষা খাওয়া দাওয়া ওই অঞ্চলের সঙ্গে মেলে। 

মোদী সরকার হিন্দুদের সমস্যা জানে। তাই তিনি পাকিস্তানের হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিলেন। এখন প্রশ্ন কেন এই নাগরিকত্ব দিতে কারো ১০ বছর তো কারো ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়। এতদিন অপেক্ষা করে কে নাগরিকত্ব চাইবে? এটা কি সহজ করা যেত না? ১৯৫৫ সালে ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা উচিত। যুগোপযোগী আইন প্রয়োজন। যেটা মোদী সরকার তার শাসন আমলে করতে পারতো। কিন্তু করেনি। তারাও সেই আগের সরকার গুলির পথেই হাটলো।  

 আজ পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ উপয়ে বাংলাদেশি হিন্দুরা বসবাস করছে। সেখানে মমতা বন্দোপাধ্যায় ও এর আগে সিপিএমের বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দুদের বৈধ উপায়ে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই চোরের মত বাংলাদেশি হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছে। পূর্বে আসা হিন্দুরা পরে আসা হিন্দুদের অনুপ্রবেশকারী বানিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাদের সম্পদ দখল করে নিচ্ছে।  বিমান বন্দর, রেল স্টেশন ও সীমান্তে কাস্টমস কর্মকর্তারা বাংলাদেশি হিন্দুদের গ্রেফতার করে অনুপ্রবেশের দায়ে জেলে আটকে রাখছে। তাদের হয়রানি করে টাকা পয়সা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। যেসব হিন্দুরা এসব ঘটনার শিকার হচ্ছেন তাদের নিজেদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে তারা মিডিয়ায় ফলাও করে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে না। তাই বলে সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না। সম্প্রতি ভারত সরকার আধার কার্ড করার কারণে বহু বাংলাদেশি হিন্দু পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে ধরা খাচ্ছেন। কেন ধরা খাচ্ছেন সেটা খতিয়ে দেখছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশে এমন অনেক হিন্দু পরিবার আছে যাদের ভারতে আত্মীয় স্বজন আছে। ভারতে হরহামেশা যাতায়াতের কারণে তাদের টাকা পয়সা খরচ করতে হয়। তাদের প্রয়োজন পড়ে ব্যাংকিং সেবার। আগে ভারত সরকারের যেকোনো ব্যাংকিং সেবা পেতেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। কারণ তারা তখন ভারতে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে যৌথ হিসাব খুলতে পারতেন। এখন আধার-কার্ড, প্যানকার্ড  বাধ্যতামূলক করার ফলে ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকের পুরানো হিসাবের বিপরীতে আধার কার্ড, প্যান কার্ড না থাকায় তাদের অ্যাকাউন্টে রাখা টাকা তুলতে পারছেন না। আর সেটা তুলতে গিয়ে পড়ছেন না জটিলতায়। সেই জটিলতা থেকে বাঁচতে তারা অবৈধ পথের আশ্রয় নিচ্ছেন। আর শিকার হচ্ছেন জেল জরিমানার। বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন হিন্দু এর শিকার হয়েছেন। ভারতে তারা কিছু না করেই জেল জরিমানার শিকার হন। কেউ কেউ ঘুষ দিয়ে অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। অথচ এ বিষয়গুলো সহজেই দূর করতে পারতো ভারত সরকার। হিন্দু বলে রেহাই নেই বাংলাদেশি হিন্দুদের। আর এই সত্যটার সঙ্গে পরিচয় হয়নি বাংলাদেশ, ভারতের ভণ্ড সেকুলার, ডান-বাম ও সুশীলদের।

 হিন্দুরা মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে। এ কথাটা সেকুল্যারিজমের খাতিরে লেখতে চায় না ভারতের কোনো মিডিয়া। জানিনা এটা তাদের কোন এথিকস। নিচে ডিএনএ ইন্ডিয়ারর রিপোর্ট হুবহু তুলে দেয়া হলো। খেয়াল করবেন নির্যাতিত হিন্দুদের সংবাদ লিখেতে গিয়ে প্রতিবেদক কখনও মুসলমান শব্দটা ব্যবহার করেনি। এমনকি জঙ্গি সন্ত্রাসীও না। এই হচ্ছে ভারতের মিডিয়া। পাদ দিবে আবার লক্ষ্য থাকবে গন্ধ যাতে না বের হয়।   

ডিএনএ  ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন

পাকিস্তানে নির্যাতিত ৯০ হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে ভারত সরকার নাগরিকত্ব দিয়েছে। এই ৯০ জনের মধ্যে ২০ জন অপ্রাপ্ত বয়সী আছে।  ১৯৫৫ সালে প্রণীত ভারতের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে তাদের হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়। ২২ জুন শুক্রবার গুজরাটে আহমেদাবাদ জেলার কালেক্টর ভিকরান্ত পাণ্ডে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে নির্যাতিতদের হাতে নাগরিকত্ব সনদ তুলে দেন। যারা ভারতের নাগরিক হলেন তারা বহুদিন আগে ভারত সরকারের কাছে নাগরিকত্বের আবেদন করেছিলেন। কেউ কেউ ২৫ বছর আগে আবেদন করে নাগরিকত্ব পান। আবার কেউ কেউ ১০ বছর আগে আবেদন করে নাগরিকত্ব পান।  খবরে এমনটাই জানানো হচ্ছে। কয়েকজনের সাক্ষাৎকার থেকে এসব খবর জানায় ভারতের ডিএনএ নামক একটি অনলাইন। ভিক্রান্ত পাণ্ডে বলেন, ১৫০ থেকে ২০০টি আবেদন এখনো জমা পড়ে আছে। আমরা আশা করছি আগামী ৬ মাসের মধ্যে এরাও ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে। 

তিনি বলেন , আজ যারা নাগরিকত্ব পেল তারা সরকারি চাকরিও করতে পারবে। তারা ভারত সরকারের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে। 

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিস্ট্রিক কালেক্টরদের পাকিস্তান,বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে নির্যাতিত  হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব সনদ দেয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয়। সেই হিসেবে গুজরাটের আহমেদাবাদ, গান্ধি নগর ও কচ্ছে বসবাসকারী পাকিস্তানি হিন্দুরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়।

ভারত খাতওয়ানি নামের ৪০ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি হিন্দু বলেন,করাচীতে তাদের একটি সুপারস্টোর ছিল। ২০০৯ সালে দীর্ঘ মেয়াদি ভারতীয় ভিসা নেন ভারতে ঢোকেন।  পাকিস্তানে আইন শৃঙ্খলা সমস্যা ও হিন্দুদের টার্গেট করা হয়। এজন্য তিনি আর সেখানে ফিরে যাননি। ২০০৯ সার থেকে তিনি আহমেদাবাদে একটি ইলেকট্রনিক দোকান খোলেন। 

নানাকমাল চাদওয়ানি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাদিন জেলায় একটি মুদি দোকান চালাতেন। তার দোকান থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হত মালামাল। তার বাড়িতে হামলা চালাতো। এখন ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে তিনি খুশি। তার স্ত্রীও একই সঙ্গে ভারতের নাগিরকত্ব পেয়েছে। 

মীরা মহেশ্বরী। ৭০ বছর বয়সী এই নারী ১০ বছর আগে ভারতে আসে। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। তার মেয়েকে অপহরণ করে। এরপর জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায়। থানা পুলিশ করে কিছু হয়নি। মেয়েকে তিনি খুঁজে পাননি। সেখানকার লোকরা তার বাড়ি ও দোকান দখল করে নেয়। তারপর সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান ছেড়ে চলে আসার। তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।     

No comments

Theme images by wingmar. Powered by Blogger.