আরেকটি সুজাতা সিং মার্কা নির্বাচনের অপেক্ষায় দেশ
আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে চলছে অস্থিরতা। অন্যকথায় অনিশ্চয়তা। নির্বাচন নিয়ে দেশে গোলযোগ সৃষ্টি হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত। দেশে ওয়ান এলিবেন পরিস্থিতির চাইতেও ভয়াবহ কিছু হতে পারে। এমন আশঙ্কা এখন দেখা দিয়েছে।
এবার যে ২০১৪ সালের মতো আরেকটি ভোটার বিহীন নির্বাচন হবে। তা যতই দিন যাচ্ছে তা আরও বেশি পরিষ্কার হচ্ছে। শাসক আওয়ামী লীগের হাবভাবে এমনটাই বোঝা যাচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারত বুঝে গেছে শাসক আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এখন শূন্যের কোঠায়। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। আর এটা বুঝতে পেরেই আওয়ামী লীগ গাজীপুর মেয়র নির্বাচনে ভোটে জিতে গিয়েও প্রার্থীর ব্যবধান বাড়াতে সচেষ্ট হতে দেখা যায়। একই ঘটনা খুলনাতেও ঘটেছে।
এসব নির্বাচনের ফল দেখিয়ে আওয়ামী লীগ বোঝাতে চাচ্ছে তাদের বিপুল জনপ্রিয়তা আছে। শাসক আওয়ামী লীগ আজ এমন এক দলে পরিণত হয়েছে যেখানে সমাজের দুর্বৃত্ত থেকে শুরু করে সুশীল পর্যন্ত তারা কিনে ফেলেছে। বাংলাদেশে আজ চোর, গুণ্ডা, ডাকাত, ছিনতাইকারী ও সুশীল সবই আওয়ামী লীগ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ নেই। এক কালে যারা ছিল বিএনপিতে এখন তারা আওয়ামী লীগে। আর এজন্য এখন কর্মী খরায় ভুগছে বিএনপি। রাজপথে আন্দোলন করতে পারছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে বিএনপির দাবি পূরণ কীভাবে হবে?
আর এটা বুঝতে পেরে ভারতের মত শক্তিগুলো অসহায়ের মতো আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে রাজপথে বিএনপি শক্তিশালী হলে কালই ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বিএনপির দিকে যাবে। সেটা বুঝতে হবে দলটির নীতি নির্ধারকদের। আর তা না হলে আরেকটি ২০১৪ সালের সুজাতা সিং মার্কা নির্বাচন দেখতে হবে বিএনপিকে।
বিএনপিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে পড়ে থাকলেই চলবে না, দলটিকে নামতে হবে তারেক জিয়াকে নিয়েও। আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াকে অংশ নিতে হবে। তবেই বিএনপির রাজনীতি পূর্ণতা পাবে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় বিএনপির কোন্দল মেটাতে হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেসব বিএনপি নেতা গোপন আঁতাত করে চলছে তাদের ছেঁটে ফেলতে হবে। এরাই বিএনপিকে দুর্বল করে রাখছে। জামায়েতের ওপর বিএনপির নির্ভরতা কমাতে হবে। জামায়াতের বিরাট একটি অংশ আওয়ামী লীগে বিলীন হয়ে গেছে। তাই জামায়েতের দিকে তাকিয়ে বিএনপির কোনো লাভ নেই। জামায়াত একটি ভুতুড়ে দলে পরিণত হয়েছে। এই ভুত আওয়ামী লীগের ঘাড়েই থাকুক।
বিএনপিকে বুঝতে হবে সে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করছে না। সে লড়াই করছে আওয়ামী লীগের মিডিয়ার বিরুদ্ধেও। বাংলাদেশের সব কয়টি মিডিয়া এখন আওয়ামী লীগের প্রচার বাক্সে পরিণত হয়েছে। তাই বিএনপিকে আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে। এমনকি সুশীলদের বিরুদ্ধেও। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে একাই লড়তে হবে। বিএনপির সঙ্গে কেউ আসবে না। এখন যারা বিএনপির সঙ্গে আছি বলে রয়েছে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেন দরবার করে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ডিগবাজি দেবে। তখন বিএনপি নিজেকে একা পাবে। এমন গেম প্ল্যান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
No comments