Header Ads

Header ADS

সংলাপের সফলতা,সরকারের ইচ্ছার ওপর


বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হচ্ছে। দেশবাসীর চোখ এই সংলাপের দিকে। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সংলাপের চিত্র হতাশার। তার কারণও অবশ্য ছিল। সাকা-জামাতের মত পাকিস্তানি এজেন্টদের কারণে সংলাপ ব্যর্থ হয়। বর্তমানে যাদের সঙ্গে সংলাপ হচ্ছে তাদের একটি ইতিবাচক দিক আছে। তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আবার সরকারের সমালোচক। বাংলাদেশের রাজনীতি যে দুই ধারায় বিভক্ত তাদের নিয়ে আজকের এই সংলাপ। তবে এর নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তারা আবার এক সময় সরকার পক্ষের লোক ছিলেন। এ কারণে দেশবাসীর আশা এই সংলাপে ভিন্ন কিছু বের হয়ে আসবে যা দেশের রাজনৈতিক শত্রুতা দূর করবে। 

এরপরও যদি এই সংলাপ ব্যর্থ হয় তাতে দায়ভার দুই পক্ষের ওপরই বর্তাবে। আশা করা যায় সেটা হবে না। সংলাপে ড. কামাল হোসেনের বিপরীতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন সময় সহায়তা করেছেন ড. কামাল হোসেন। তবে সরকারের কিছু চাটুকার ও বিদেশি এজেন্টের হয়ে যারা কাজ করেন তারা ড.কামাল হোসেনের এই জায়গায় আক্রমণ শুরু করে দিয়েছেন। তারা শেখ মুজিব হত্যার পর কামাল হোসেন সহায়তা করেনি ইত্যাদি পুরানো ফাটা রেকর্ড বাজাচ্ছেন। অথচ ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ড. কামাল হোসেনের রূপরেখা তৈরির ইতিহাস তারা বেমালুম চেপে যাচ্ছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে দেশে আনার পেছনেও রয়েছে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা। এমন একটি মানুষের সঙ্গে সংলাপ যদি ব্যর্থ হয় তবে দেশের কপালে দুর্ভোগ আছে।

বিএনপি থেকে উসকানি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নৈশ ভোজ বাতিল কোনো ভালো পদক্ষেপ নয়। দুই পক্ষে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা আড়ালে থেকে সংলাপ নষ্ট করতে চায়। তাদের এসব মাথা থেকে ঝেড়ে দিয়ে সংলাপ করে যেতে হবে। সরকার চায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করুক। আর বিএনপিসহ সমমনারা চায় শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নির্বাচন করুক। এটা নিয়ে যদি সবাই নিজের অবস্থানে অনড় থাকে। তবে সংলাপ হবে না। আর এটাই চায় এরশাদের মত দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা। তাই প্রত্যেকের এই অনড় অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

 শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই নির্বাচন করতে হবে। এজন্য আওয়ামী লীগের বিকল্প প্রস্তাবগুলো নিয়ে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টকে ভেবে দেখতে হবে। অতীতে বিএনপির গোঁয়ার্তুমির জন্য এসব কিছুই হয়নি। ফলে বিএনপি ছিল নির্বাচনের বাইরে। এবার এই গোঁয়ার্তুমি ভাব ছাড়তে হবে। 

ইভিএমের ব্যাপারে সরকারকে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে হবে। আওয়ামী লীগ ছাড়া  বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে। তাই ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বিএনপির নেতা কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। এক্ষেত্রে আদালতকে প্রভাবমুক্ত করতে হবে। সব দলের মত নিয়ে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

নির্বাচন কালীন সরকার গড়তে হবে যার প্রধান থাকবেন শেখ হাসিনা। নির্বাচন কালীন সরকার জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠন হতে পারে।

 নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা তার বিকল্প। তবে পুলিশ দিয়ে নির্বাচন কোনো মতেই নয়। কারণ পুলিশ হচ্ছে ছাত্রলীগের শাখা সংগঠন। এদের দায়িত্ব দিলে নির্বাচন কোনো মতেই সুষ্ঠু হবে না।

 এখন সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের ইচ্ছা শক্তির ওপর। তবে ভারত যেভাবে শেখ হাসিনাকে এক তরফাভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তাতে এই সংলাপ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। তাই এরশাদকে নিয়ে আবার একটা ২০১৪ মার্কা নির্বাচনের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।               

No comments

Theme images by wingmar. Powered by Blogger.